ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন যে সকল জায়গা
প্রিয় পাঠকগণ আজকের বিষয় ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন যে সকল জায়গা। ঈদ হচ্ছে ইসলামিক একটি উৎসব। এটি মূলত মুসলমান জাতির জন্য গ্রহণযোগ্য। বিশ্বের সকল মুসলমান ঈদের সময় আনন্দে মেতে উঠেন। বর্তমানে অনেক চাকুরিজীবী, ব্যাবসিয়ক, শ্রমজীবী মানুষ আছেন যারা ঈরে মুহূর্তটাকে আরো উপভোগ করার জন্য একটু হলেও ঘুরাঘুরি করতে চান।
আজ আমি তাদের উদ্দেশ্যে বেশ কিছু তথ্য শেয়ার করবো। আশা কররি আপনাদের এই বিষয়টি অনেক ভালো লাগবে। ঈদের লম্বা ছুটিতে অনেক জন অনেক জায়গায় ঘুরাফেরা করে। যার যেমন ছুটি সে তেমন প্লান করে। আবার ঘুরার সাথে অর্থেরও সম্পর্ক আছে কেউ নিজ দেশের বিভিন্ন এলাকা, অঞ্চল এসব ঘুরে বেরায় আবার কেউ দেশের বাইরেও ঘুরতে যায়। সত্যিকার অর্থে ঘুরাঘুরি করেনা এমন মানুষ খুব কম। বর্তমানে জীবনকে উপভোগ করার জন্য ঘুরাঘুরি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। যাইকো আমরা তাহলে যেনে নি ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসা যায় যে সকল জায়গায়।
ঢাকার ভিতরে ঘুরে আসার কিছু স্থান
অনেকে ঢাকায় থাকেন। বিশেষ করে যারা ঢাকায় চাকুরি করেন কিন্তু ছুটি না পাওয়ার কারণে হয়তো বাসায় আসতে পারেন নি তারে জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান শেয়ার করব। বর্তমানে ঢাকায় অনেক পার্ক রয়েছে যেসকল পার্কে কিছু সময় কাটানো যায়। যেমন ছোট শিশুদের জন্য শাহাবাগের শিশুপার্ক, শ্যামলীর শিশুমেলা, স্বামীবাগের ওয়ান্ডারল্যান্ড, জাতীয় চিড়িয়াখানা বা বসুন্ধরা সিটির টগি ওয়াল্ডে। এমন ধরনের পার্কে শিশুরে বিনোদন দেওয়ার জন্য নিয়ে যেতে পারেন। আর বড়দের জন্য আছে এমিউজমেন্ট পার্ক যেমন যমুনা ফিউচার পার্ক, আশুলিয়ায় নন্দন পার্ক ও ফ্যান্টাসি কিংডম। এছাড়াও যেতে পারেন বলদা গার্ডেন, বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চন্দ্রিমা উদ্দ্যানে।
ঢাকা শহর বা তার আশেপাশের কিছু ঘুরার মতো স্থান
বর্তমানে ঢাকা শহরের বাইরে বিভিন্ন বিনোদন স্থান রয়েছে যে সকল স্থানে আপনি ঘুরে আসতে পারেন। নিম্নে সে সকল স্থানের বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
হাতিরঝিল: রাজধানির হাতিঝিল একটি বিনোদন হিসাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। বর্তমানে অনেকে মানুষ হাতিরঝিল এলাকায় ঘুরতে যায়। ওয়াটার বোটের বসে আপনি প্রাকৃতিক হাওয়া অনুভব করতে পারবেন।
সাফারি পার্ক: এই পার্ক বর্তমানে একটি জনপ্রিয় পার্ক। এটি গাজীপুরে অবস্থিত। যদিও ঢাকা থেকে অনেকটা দূরে কিন্তু দিনে দিনেই এটি থেকে ঘুরে আসা যায়। সাফারি পার্কের জনপ্রিয়তা দিনদিন অনেক বৃ্দ্ধি পাচ্ছে। এখানে বাসে উঠে বাঘ, সিংহসহ বিভিন্ন প্রাণীদের আশে পাশে ঘুরা যায়। সবচেয়ে এই বিষয় টা বড় মজাদার। যা বাংলাদেশের অন্য কোন পার্কে নেই।
ভাওয়াল উদ্যান: গাজিপুর: গাজীপুরের আরেকটি জায়গা হচ্ছে ভাওয়াল উদ্যান। এটি মূলত একটি প্রাকৃতিক বন বলা যেতে পারে। আনেক গরমের সময়ের অনেক ঠান্ডা একটা জায়গা। এখানে অনেক গাছগাছালি আছে। ভিতরে অনেক সরু আকৃতির অনেক রাস্তা আছে। চারিদিরে বন পরিবেশ দেখে আপনার মন ভরে যাবে।
আহসান মঞ্জিল: আহসান মঞ্জিল একটি একটি ঐতিহাসিক স্থান। যা ঢাকার ইসলামপুর বুড়িগঙ্গার নদীর তীরে অবস্থিত। আহসান মঞ্জিলে প্রতিদিনই বিভিন্ন জায়গার মানুষ দেখতে আসে।
শালবন বৌদ্ধ বিহার: বাংলাদেশের েএক প্রাচীন নির্দশন হলো শালবন বৌদ্ধ বিহার। যা কুমিল্লা জেলার লালমাই ময়মনসিংহ জেলায় অবস্থিত।
লালবাগের কেল্লা: ঢাকায় অবস্থিত লালবাগের কেল্লা এটি একটি জনপ্রিয় স্থান। অনেক মানুষ এই স্থানে বিনোদনের জন্যে বেড়াতে আসে। তাছাড়া ঢাকা আশেপাশে যারা আছেন তারাও পরিবার নিয়ে লালবাগের কেল্লায় ঘুরে আসতে পারেন।
চট্টগ্রামে ঈদের ছুটিতে যে সকল জায়গায় ঘুরে আসা যায়
পার্বত অঞ্চল নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামে বিভিন্ন স্থান রয়েছে যে সকল স্থানে আপনি ঘুরে আসতে পারেন। যেমন নীলগিরি, স্বর্ণমন্দির, মেঘলা, শৈল প্রপাতের মতো আরও অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে চট্টগ্রামে। তাছাড়া সমুন্দ্রবন্দরও রয়েছে।
বান্দরবন
যাদের মেঘের রাজ্যে হারিয়ে যেতে মন চাই তারা ঘুরে আসতে পারেন বান্দরবন থেকে। বান্দরবনে রয়েছে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান যে সকল স্থানগুলো আপনাকে অনেক বিনোদন দিয়ে থাকবে। মেঘলা, নীলগিরি, স্বর্ণমন্দির, শেল প্রপাতের মতো অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে বান্দরবনে।
রাঙ্গামাটি
বাংলাদেশের দর্শনীয় অঞ্চলগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা হলো রাঙ্গামাটি জেলা। এখানে প্রতিবছর অনেক মানুষ ঘুরতে আসে। ঈদকে কেন্দ্র করেও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ রাঙ্গামাটি জেলায় ঘুরতে আসে। রাঙ্গামাটি জেলায় যেসকল জায়গা রয়েছে যেমন: কাপ্তাই হ্রদ, ঝর্না, সাজেকভ্যালী, কাপ্তাই বাধ, পেদা টিং টিং রেস্তোরা, ঝুলন্ত সেতুসহ বিভিন্ন জায়গা রয়েছে।
কক্সবাজার
যারা সাগর প্রেমী মানুষ তারা নিঃসন্দেহে যেতে পারেন কক্সবাজার। কক্সবাজার বাংলাদেশের জন্য একটি জনপ্রিয় জায়গা। এখানে দেশের বাইরে থেকে অনেক পর্যটক ঘুরতে আসে। তাছাড়ারা দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ এই কক্সবাজারে ঘুরতে আসে। বাংলাদেশের কক্সবাজারকে বলা হয় অর্থনৈতিক েএকটা স্থান।
সিলেট
সিলেট একটি চায়ের দেশ। এখানে অসংখ্য চায়ের উৎপাদন করা হয়। সিলেটের এই চায়ের অঞ্চলে গেলে মনে হয় সবুজ এটি দেশে প্রবেশ করেছি। তাছাড়া সিলেটর জনপ্রিয় একটা স্থান জাফলং। তাছাড়াও ঘুরে আসতে পারেন রাতারগুল, লালখাল, বিছানাকান্দি এসব স্থান রয়েছে।
শ্রীমঙ্গল
সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার একটি উপজেলা শ্রীমঙ্গল। বাংলাদেশের ভ্রমণ পিপাসু মানুষের একটি পছন্দের একটি স্থান। এখানে রয়েছে অনেক সৌন্দর্যপূর্ণ একটি জায়গা। যেমন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, বাইক্কা বিল, চা গবেষণা কেন্দ্র ইত্যাদি। এসব জায়গায় পর্যটকদের ভির দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কুয়াকাটা
কুয়াকাটাকে সাগর কণ্যাও বলা হয়। এখানে আপনি সগরের পাশাপাশি অনেক প্রাকৃতিক দৃশ্য খেতে পারবেন। যেমন সূর্যদয় এবং সূর্যাস্ত এসব দেখা যায়। তাছাড়া আরও রয়েছে বিভিন্ন স্থান যে স্থানগুলোতে পর্যটক দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন যে সকল দেশ
অনেক ভ্রমণ প্রিয় মানুষ আছেন যারা দেশের বাইরে ট্যুর দিতে চান কিন্তু চাকুরি বা কাজের জন্য যেতে পারেন না। তারাও পারেন এই ঈদের ছুটিকে কাজে লাগাতে। ঘুরে আসতে পারেন বিভিন্ন দেশ থেকে। আজ আমি আপনাদের সাথে কিছু দেশ ঘুরে আসার কথা শেয়ার করবো আশাকরি আপনাদের বিষয়টা অনেক ভালো লাগবে।
জাপান
জাপান বর্তমান বিশ্বের একটি উন্নত দেশ। জাপানকে সূর্যদয়ের দেশ বলা হয়। এটি অতীতের সংস্কৃতি ও আধুনিকতার সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা জাপান দেশ। জাপানে রয়েছে বিভিন্ন প্রকৃতিক ও কৃত্তিম উপায়ে তৈরি বিনোদনমূলক স্থান। যেমন জাপানের আলপস, চুবু-সাংকু জাতীয় উদ্যান, ওসাকা জাতীয় উদ্যান, ইটুকুশিয়া দ্বীপ, হিরোশিমা শান্তি স্মৃতিচিহ্ন পার্ক, ফুজি পর্বতমালাসহ বিভিন্ন স্থান রয়েছে।
ইন্ডিয়া
বাংলাদেশের একটি প্রতিবেশি দেশ ইন্ডিয়া। যদিও অনেক বাংলাদেশির ইন্ডিয়া জাওয়াটা একটা সহজ ব্যাপার। যারা ইন্ডিয়া গেছেন তারা তো জানেন ইন্ডিয়ার সৌন্দয্যপূর্ণ জায়গা সম্পর্কে। ইন্ডিয়া একটা বড় দেশ প্রায় প্রতিটি প্রদেশে বেশ কিছু ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে। এছাড়া ইন্ডিয়ার রয়েছে কলকাতা, সিলিগুরি, কাশ্মির ইন্দিয়াতে বিভিন্ন বিনোদনমূলক স্থান রয়েছে।
ইতালি
স্মার্ট জায়গা, স্মার্ট টেরেস এবং সাংস্কৃতিক ইতিহাসের নাম করা এক দেশ ইতালি। রেনেসাঁ যুদ্ধ এবং রোমানদের বাড়ি স্থাপত্যের উদাহরণ হলো ইতালি দেশ। ইতালির প্রায় সব জায়গায় আপনাকে একটি চিরস্থায়ী স্মৃতি দিতে পারবে তাছাড়া বিশ্বের সেরা খাবারের নিশ্চয়তাও দিতে পারবে ইতালি। পর্যটক হিসেবে রোম, তাসিকানি, ফ্লোরেন্স, ভেনিস জনপ্রিয় স্থান।
ঘুরতে যাওয়ার আগে যেসব বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন
- যেকোনো ট্যুরে যাওয়ার জন্য আপনাকে পূর্ব পরিকল্পনা করতে হবে। যেমন কোথায় যাবেন? বাজেট কত? কখন যাবেন? কীভাবে যাবেন? এসব বিষয়ে পূর্বপরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন।
- দেশের বাইরে ঘুরতে যাওয়ার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই পাসপোর্ট ভিসার বিষয়ে আগে থেকে সব কিছু ঠিকঠাক করতে হবে। যাতে করে পরে কোন সমস্যায় না পরেন।
- ঈদের মধ্যে টিকিট যে জটিলতা আপনাকে সেই বিষয়ে নজর দিতে হবে। কোথায় যাবেন? কিভাবে যাবেন? কিসের যাবেন? সেই বিষয়টি খেয়াল রেখে আপনাকে আগে থেকেই টিকিট বা গাড়ি বুকিং করে রাখত হবে।
- আপনার নিজস্ব এলাকার মধ্যে বা একদিনের ট্যুরে হলে বাসা থেকে রান্না করে খাবার নিয়ে যেতে পারেন যার ফলে খরচ কম হবে। পাশাপাশি নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবারের নিশ্চয়তাও পেলেন।
- কোথাও ট্যুরে গেলে একটা ফাস্ট এইড বক্স সাথে রাখতে পারলে অবশ্যই ভালো হয়। কখন কোথায় কাজে লাগতে পারে বলা যায় না।
- সর্বশেষ যেটা কথা আপনি যেখানেই ঘুরতে যান না কেন আপনার কারণে যাতে করে অন্যের ক্ষতি বা ট্যুরিস্ট স্পট গুলোর পরিবেশ নষ্ট হয় এমন কাজ কখনও করবেন না।
লার্নিফাইবিডির শেষ কথা
আজকের আলোচনার বিষয় ছিলো ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন যে সকল জায়গা? উরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে অনেক কিছুই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশাকরি আপনারে অনেক ভালো লেগেছে। এমন আরোও বিনোনমূলক তথ্য জানতে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।